
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে ৫ আগস্টের পর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কথিত সভাপতি আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক এম বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ১০ জন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমিসহ আমাদের অন্তত ১০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাভিশন টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমরা জেলা প্রসাসন, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার জানিয়ে এবং তাদের সাথে কথা বলে আমরা সোমবার সাধারণ সভার আয়োজন করি। সে উদ্দেশ্যে শান্তিপূর্ণভাবে সদস্যদের নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে গেটে প্রবেশ করার মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। আগে থেকে সেখানে থানার পুলিশ মোতায়েন করা থাকলেও পুলিশের ভূমিকা ছিলো একেবার নিরব ও সন্দেহ জনক। আমরা এই হামলার বিচার ও আসামিদের দূরত্ব গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
এ দিকে এই হামলার ঘটনা জড়িত আসামিদের ধরতে এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবকে অবৈধ দখলমুক্ত করতে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ ডাক দিয়েছে জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি শামিনুল হক বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ দ্রুত উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখনই নিরাপত্তা জোরদারে সেখানে সেনাবাহিনীর একটি দল মোতায়েন করা হয়। এখনো প্রেসক্লাব চত্বরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।