
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচটি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামি দল একটি নির্বাচনি সমঝোতায় পৌঁছেছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি দল থেকে দুইজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি লিয়াজোঁ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপের পর এই দলগুলো আবারও আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
সমঝোতায় পৌঁছানো দলগুলো হলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং নেজামে ইসলাম পার্টি (একাংশ)।
নেতারা জানিয়েছেন, এটি এখনো কোনো জোট নয় বরং সমঝোতার প্রাথমিক উদ্যোগ। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে পাঁচ দলের ঐক্যের যে আলোচনা বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটিকে নেতারা ‘অপপ্রচার’ বলেই অভিহিত করেছেন।
নেতারা বলেন, পাঁচ দলের এই উদ্যোগ মূলত নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামি ঘরানার প্রার্থীদের একক প্রার্থী দেয়ার কৌশলগত প্রচেষ্টা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পাঁচটি বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়েছেÑআসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেয়ার কৌশল নির্ধারণ, ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার প্রচেষ্টা, ফ্যাসিবাদবিরোধিতা, গণহত্যাকারীদের বিচার, এবং নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল।
এদিকে জামায়াতের সঙ্গে সম্ভাব্য জোট গঠন বা সমঝোতা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা আগে নিজেদের মধ্যে ঐক্য দৃঢ় করছি। জামায়াতের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।’
জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘জামায়াতের নেতৃত্বে পাঁচ দলের ঐকমত্যের কথা স্রেফ অপপ্রচার।’
অন্যদিকে, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের জানান, এখনও ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য বা জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এই বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করেছে। দলটির কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, তিনশ আসনে প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে, যা শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে। ২৮ জুন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে মহাসমাবেশ করবে এবং সেখানেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামী রাজনৈতিক অঙ্গনে সমঝোতার এই প্রচেষ্টা কতদূর এগোয়, জামায়াত শেষ পর্যন্ত এই সমঝোতায় যুক্ত হয় কিনা সেটি এখন রাজনৈতিক মহলের নজরে।