
যশোরে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে প্রতিবাদী সমাবেশ এবং মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে টাউন হল ময়দানে সমাবেশের পর সন্ধ্যায় শহরজুড়ে মিছিলটি বের হয়।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ এবং রাখাইনে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপনের নামে দেশ বিক্রির চক্রান্তÑজনগণের স্বাধীনতার চেতনার ওপর সরাসরি আঘাত। তারা বলেন, ‘এসব চক্রান্ত দেশপ্রেমিক জনতা কখনোই মেনে নেবে না।’
এছাড়া বক্তারা অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভাস্কর্য, বাউল আখড়া ও সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলোতে হামলা, শাহাজাতপুরে রবীন্দ্রনাথের কাছারি বাড়ি ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনা সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানকে স্পষ্ট করছে। অথচ এসব বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরবতা ও ব্যর্থতা জনগণকে হতাশ করেছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘মানুষ যে স্বপ্ন নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিল, তা আজ বন্দর ইজারা, করিডোর প্রস্তাব ও মব-সন্ত্রাসের মাধ্যমে ছিন্নভিন্ন হচ্ছে। এই সব দেশবিরোধী সিদ্ধান্ত সেই স্বপ্নের পিঠে ছুরিকাঘাতের নামান্তর।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যশোর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু। বক্তব্য রাখেন বামজোটের প্রতিনিধি শাহজাহান আলী, মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল, সংস্কৃতিজন বাসুদেব বিশ্বাস, জুলাই আন্দোলনের নেতা ইমরান খান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন উদীচী যশোরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু।
সমাবেশের শুরুতে গণসংগীত পরিবেশন করে উদীচী যশোর, সুরধুনী, পুনশ্চ ও বাউলিয়া সংঘ। এরপর শত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মূল আলোচনা সভা শুরু হয়।
সমাবেশ শেষে শত শত নারী-পুরুষ মশাল হাতে একটি শ্লোগানমুখর মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন। তারা ‘দেশ বিক্রি বন্ধ করো’, ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’, ‘চট্টগ্রাম বন্দর জাতির সম্পদ’Ñইত্যাদি শ্লোগানে মুখর ছিল।
বক্তারা সকল দেশপ্রেমিক নাগরিককে দেশবিরোধী চক্রান্ত প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।