মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫

১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকার, উলটো মামলার আসামি ভুক্তভোগীর পরিবার

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ২৯ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৯:৫৩, ২৯ জুন ২০২৫

জীবননগরে মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকার, উলটো মামলার আসামি ভুক্তভোগীর পরিবার

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারকাজুল উলূম বালিহূদা মাদ্রাসার ১১ বছরের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। আন্দুলবাড়ীয়া-হাসাদাহ রোড সংলগ্ন ওই মাদ্রাসাটির শিক্ষক জিল্লুর রহমানের (৩২) বিরুদ্ধে উঠেছে এমন অভিযোগ। গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) এ ঘটনা ঘটে।


অভিযুক্ত মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক জিল্লুর রহমান মাগুরার শালিখা উপজেলার হাসখালি গ্রামের জলিল মোল্লার ছেলে। তিনি গত দুই বছর ধরে মাদ্রাসাটিতে শিক্ষকতা করছেন।


এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা ও ভাই প্রতিবাদ করলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খান উলটো ভুক্তভোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় অভিযোগ করেছেন। 


ভুক্তভোগী ওই ছাত্র জানায়, অন্যান্য দিনের মত গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিল। অনেক রাতে মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক জিল্লুর রহমান তার কাছে এসে পোশাক খুলে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। এরপর কাউকে কোন কিছু বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরের দিন বুধবার (২৫ জুন) কৌশলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে যায় ও তার বাবা-মা ও ভাইকে বিষয়টি জানায়।


ভুক্তভোগী ছাত্রের বড় ভাই বলেন, আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ঘটনাটি শোনা মাত্রই মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খানকে মোবাইল ফোনে কল দিই ও ঘটনাটি খুলে বলি। তিনি আমাকে বিষয়টি বিচারের আশ্বাস দিয়ে চুপ করে বসে থাকেন। ঘটনার তিনদিন পর তার সাথে দেখা করলে আমার ভাইয়ের বইপত্র ও জামা কাপড়  মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যেতে বলে জানিয়ে দেন; এই মাদ্রাসায় তার পড়াশোনার আর সুযোগ নেই। 


ছাত্রটির বড় ভাই আরো বলেন, এ কথা শোনার পর আমি বাসায় চলে আসি। সবকিছু আমার পরিবারের কাছে জানালে আমার  আত্মীয়-স্বজনসহ শুক্রবার (২৭ জুন ) ওই মাদ্রাসায় যাই। সেখানে অভিযুক্ত শিক্ষক ও পরিচালককের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। তারপর স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে আমরা বাসায় চলে আসি।


তিনি আরো জানান, পরের দিন শনিবার (২৮ জুন ) আমরা জানতে পারি মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খান আমাদের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ভাঙচুর এবং দুই লাখ টাকা লুটপাটের কথা বলে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। 
এ বিষয়ে মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খান বলেন, এটি একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাজানো ঘটনা। আমার মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট করার জন্য কুচক্রী মহল কাজ করছে। ওই  শিক্ষার্থী মাদ্রাসার পড়াশোনার চাপ নিতে পারছে না বলেই সে এরকম অভিযোগ করে। এ ছাড়াও ওই শিক্ষার্থীর এর আগেও মাদ্রাসা থেকে কয়েকবার পালিয়ে গিয়েছে।


এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, এই মাদ্রাসায় ৩০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তারা একসাথে রাত্রে ঘুমায়। আমি যদি এমন কাজ করি তাহলে কেউ না কেউ শব্দ শুনতো। তাছাড়া আমি এই মাদ্রাসায় দুই বছর সুনামের সাথে শিক্ষকতা করছি। এ ধরনের অভিযোগ কেউ দিতে পারবে না। 


এ বিষয়ে জীবনগর থানার ওসি  মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খান মাদ্রাসা ভাঙচুর এবং ২ লাখ টাকা লুটপাটের বিষয় নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি । আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তদন্ত করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

শীর্ষ সংবাদ: