বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫

৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাসী আয়ে আশার আলো

রানার প্র‌তি‌বেদক

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৮ জুলাই ২০২৫

প্রবাসী আয়ে আশার আলো

চলতি জুলাই মাসের প্রথম ছয় দিনে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ থেকে ৬ জুলাই  পর্যন্ত সময়ে দেশে মোট ৪২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে কেবল ৩ থেকে ৬ জুলাই-এই তিন দিনেই রেমিট্যান্স এসেছে ২২২ মিলিয়ন ডলার।

গত বছরের একই সময়ে (১-৬ জুলাই ২০২৪) দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩৭১ মিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে মাসের প্রথম ছয় দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহে ১৫.৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে কার্যকর নজরদারি, ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রণোদনার সুফল এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ প্রবাসী কর্মসংস্থানে স্থিতিশীলতার কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ইতিবাচক গতি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে এখন প্রবাসীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ঈদ-পরবর্তী সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থে এমন প্রবৃদ্ধি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক আয় ও অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে এই গতি বজায় থাকলে পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথ সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত- সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। এর আগে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে।
এক বছর আগের তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে রেমিটেন্স বেড়েছে ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

গত ১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের রেমিটেন্সের হালনাগাদ তথ্য দেন।

মাসের হিসাবে এ বছরের জুনে রেমিটেন্স এসেছে ২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের এ মাসে এসেছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে জুনে রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছে ১১ শতাংশ।

রেমিটেন্স বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যাংকাররা ডলারের ভালো দর থাকার কথা তুলে ধরেন। টাকার বিনিময়ে পুরো বছরজুড়েই উচ্চ দর মিলেছে। বছর দেড়েক ধরে ডলারের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বাজারও স্থিতিশীল রয়েছে। এখন প্রতি ডলারের বিপরীতে ব্যাংক ও মানি ট্রান্সফার এজেন্সিগুলোতে ১২২ থেকে ১২৩ টাকা মিলছে।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, দুটি কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছে। সেটি হল ডলার বাজার স্থিতিশীল হওয়া ও হুন্ডির প্রবণতা কমা।

তার ভাষ্য, নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে হুন্ডির পথে রেমিটেন্স আনা আগের চেয়ে কমেছে। তাতে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স বেশি পাঠাচ্ছে। এ কারণেই রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়ছে। এ ছাড়া ডলার দর মার্কেটের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কারণে দর স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

আইএমএফের শর্ত মেনে চলতি বছর মে মাস থেকে ডলার দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
 

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: