সোমবার ৩০ জুন ২০২৫

১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাকায় ঘোরে ভাগ্যের চাকা

ব‌সির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৩০ জুন ২০২৫

চাকায় ঘোরে ভাগ্যের চাকা

কাঠের চাকা তৈরীর একমাত্র উপকরন বাবলা গাছের সহজলভ্যতার কারনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা-গাড়াগঞ্জ সড়কের ওয়াপদার পাশে রাস্তার দু’ধারে ছোট ছোট টিনের ঘরে গড়ে ওঠে গরু, মহিষের গাড়ির চাকা তৈরীর কারখানা। এ কারখানায় চাকা তৈরি করেন ইলিয়াস উদ্দিন ও সদর আলী নামে দুই কারীগর।

 তাদের দু’জ‌নের বাড়ি রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জের ফাটাপাড়া গ্রামে। পরিবার সেখানে থাকলেও পেশাগত কারণে এখানকার ঝুঁপড়ি ঘরেই থাকেন তারা। কাজের চাপ কম থাকলে বাড়িতে যান।

এই কারীগররা জানান, আগে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ জোড়া চাকা বিক্রি হলেও কালের বিবর্তণে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩-৪ জোড়ায়। ভরা মৌসুমে (অগ্রহায়ন ও চৈত্র মাস) কাজের চাপ থাকলে ২ দিনেই তৈরি করেন প্রতি জোড়া চাকা। প্রতি জোড়ায় প্রায় ৮ ফুট (সিএফটি) বাবলা কাঠ লাগে। তা কিনতে খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার ৮’শ টাকা। 

আর চাকা তৈরির পর প্রতিজোড়া বিক্রি করেন ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায়। 

তারা জানান, কাজ না থাকলে বাড়িতে গিয়ে চাষাবাদসহ অন্যান্য কাজ করেন। তা না হলে সংসার চলে না। 

পাকা রাস্তাঘাট আর প্রযুক্তির ছোয়ায় গরু-মহিষের চাকার কদর নেই আর। পাটের মৌসুমে এ চাকার কদর কিছুটা বাড়ে। কাদার মধ্যে অন্য গাড়ি যেতে না পারায় মাঠ থেকে পাট আনার জন্য গরু বা মহিষের গাড়ি প্রয়োজন হয়। তখন গাড়িওয়ালা পুরাতন বা ভেঙে যাওয়া চাকা বাদ দিয়ে নতুন চাকা লাগায়। 

প্রতিবছর অগ্রহায়ন ও চৈত্র মাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয় তাদের। এসময়টায় চাকার চাহিদা বাড়ে,রোজগারও বেশি হয়। তা দিয়েই কোনরকমে চলে সংসার। চাকা তৈরি করে বিক্রি করতে না পারলে সংসার চলে না। তবে খুব তাড়াতাড়ি গরু-মহিষের গাড়ি বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে শঙ্কা তাদের।


গ্রামীণ ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য হলেও এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার দাবি স্থানীয়দের।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

শীর্ষ সংবাদ: