বুধবার ১৫ অক্টোবর ২০২৫

২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব, উদ্বেগে ভারত

রানার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৩১, ৭ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৮:৩১, ৭ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব, উদ্বেগে ভারত

ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্র বিক্ষোভে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসেন। এরপর থেকে গত ১৪ মাসে চীনা কর্মকর্তারা বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের সাথে কমপক্ষে সাতটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। পাকিস্তানে পরিসংখ্যাটি আরো বড়। চীনা কর্মকর্তারা এই বছর পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সাথে ২২টি উচ্চ পর্যায়েরে বৈঠক করেছেন।

এ কূটনৈতিক তৎপরতার পেছনে রয়েছে গভীর কৌশল। বৈশ্বিক রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারে মরিয়া চীন ও ভারত দুই দেশই। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে। চীনের এ ধরনের ভূরাজনৈতিক পদক্ষেপে একদিকে ভারতকে ব্যস্ত করে তুলছে, অন্যদিকে ভারত মহাসাগরে নিজেদের প্রবেশাধিকারও নিশ্চিত করছে বেইজিং।

চীন ভারতের আশপাশের অঞ্চলকে নিজেদের কার্যক্রম ও প্রভাব বিস্তারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। স্টিমসন সেন্টারের চীন ও দক্ষিণ এশিয়া প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো ড্যানিয়েল মার্কি ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে প্রভাব বিস্তার করাকে সঠিক বা ন্যায্য হিসেবেই বিবেচনা করে চীন। ভারত যাতে নিজের প্রতিবেশী মনে করে, ঠিক একইভাবে চীনের কাছেও তাই।’

ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের গবেষক অমিত রঞ্জন বলেন, ‘ভারত বর্তমানে শক্তিশালী অবস্থানে নেই, তাই চীন এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে নয়াদিল্লির কেবল তিনটি ছোট দেশ - শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং ভুটানের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ উভয় দেশেই চীনের উপস্থিতি রয়েছে এবং তারা ভূটানের সীমান্তে অগ্রসর হচ্ছে।’

‘ভারতের বিচ্ছিন্নতা’, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি, চীনের জন্যও লাভজনক হবে। অমিত রঞ্জনের মতে, ‘দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে চীনের অনেক কূটনৈতিক কৌশলের মধ্যে, বাংলাদেশে বেইজিংয়ের প্রভাব নয়াদিল্লির জন্য সবচেয়ে গভীর এবং সবচেয়ে উদ্বেগজনক।’

ভারত বিশ্বাস করে যে ইউনূস সরকার ইসলামপন্থীদের প্রতি খুব নমনীয় এবং চীনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কারণে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্যগুলো সীমান্ত উত্তেজনার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। রাজ্যগুলো ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডোরের মাধ্যমে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মার্চ মাসে বেইজিং সফরের সময়, ড. ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে ‘স্থলবেষ্টিত’ এবং সমুদ্রে প্রবেশাধিকারের জন্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল বলে বর্ণনা করেন। তার এই বক্তব্য ভারতের এই ভয়কে আরো বাড়িয়ে তোলে। প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশ ভবিষ্যতে চীনা অর্থনীতির সম্প্রসারণের একটি অংশ হয়ে উঠতে পারে।
 

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: