বুধবার ১৫ অক্টোবর ২০২৫

২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চবি প্রশাসনকে লাল কার্ড, চতুর্মুখী বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা

রানার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৪৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৭:৪৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চবি প্রশাসনকে লাল কার্ড, চতুর্মুখী বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে এখন টানটান উত্তেজনা। রোববার সেই উত্তেজনার মধ্যেই চারদিক থেকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে মুখর হয়ে উঠেছিল প্রশাসনিক ভবনের সামনের এলাকা। ব্যর্থতা ও নারীবিদ্বেষী মনোভাবের অভিযোগ তুলে একাধিক সংগঠন ও বিভাগভিত্তিক শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন সেখানে।

দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে মৌন মিছিল শুরু করে শাখা ছাত্রদল। হাতে লাল কার্ড প্রদর্শন করে তারা বুদ্ধিজীবী চত্বরে এসে স্লোগান দেন— ‘লাল কার্ড লাল কার্ড, প্রশাসনকে লাল কার্ড’, ‘জমিদারদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘নারীবিদ্বেষী প্রশাসন, লাল কার্ড লাল কার্ড’। পরে মিছিলটি কলারঝুপড়ি হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।

সমাবেশে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘এই প্রশাসন ব্যর্থ—শিক্ষার্থীদের আবাসন ও নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তাই আমরা লাল কার্ড প্রদর্শন করছি, এটি অন্যায়ের প্রতিবাদ। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এক ছাত্রীকে আইডি কার্ড নিয়ে হুমকি দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের হাতে হেনস্তার শিকার হলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’

দুপুর দুইটায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে চতুর্মুখী বিক্ষোভে যোগ দেয় আরও তিনটি পক্ষ—‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবং ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপাচার্যের কাছে সাত দফা দাবির স্মারকলিপি জমা দেন। বাংলা বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের অন্যতম দাবি প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ। আমরা তিন দিন ধরে আন্দোলন করছি এবং গণস্বাক্ষর নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।’

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগের এক ছাত্রীকে অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে দারোয়ানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন। তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিশির মাহমুদ বলেন, ‘৩১ আগস্ট সংঘর্ষে আমাদের জুনিয়রকে দারোয়ান আঘাত করে। পরে সভায় তার নামে মিথ্যা অপমান করা হয়। আমরা এর বিচার চাই, সেই সঙ্গে ব্যর্থ প্রশাসনের পদত্যাগও।’

এদিকে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কাননকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদুর রহমান বলেন, ‘৩১ আগস্টের ঘটনা তদন্তাধীন থাকা সত্ত্বেও আমাদের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপমান সহ্য করব না।’

এদিনের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বারবার স্লোগানে উচ্চারণ করেন প্রশাসনের ব্যর্থতা, নিরাপত্তাহীনতা এবং নারীবিদ্বেষী আচরণের অভিযোগ। বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান মিলিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনের পরিবেশ ছিল টানটান উত্তেজনাপূর্ণ।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: