ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করছে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এসএসসি পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেভাগেই সিলেবাস শেষ করার টার্গেট নিয়ে চলছে এই মিশন। তবে, শুধু সিলেবাস শেষের টার্গেটই মুখ্য নয়, রয়েছে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নেরও লক্ষ্য। ‘মিশন এ-প্লাস’ প্রকল্প ঘিরে শীলা রায় চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে যেন ‘এসএসসি পরীক্ষা যুদ্ধের’ ওয়ার্মআপ পর্ব।
প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী; পরীক্ষায় নৈপুণ্য অর্জনের প্রস্তুতি হিসেবে চলছে- অ্যাকাডেমিক বিষয়গুলো ঠিকঠাক মতো অনুধাবনের উপযোগী করে পাঠদান। পাশাপাশি চলছে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত বিষয়াদির ওপর শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠনের দক্ষতা ছাড়াও অধ্যয়নের মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য বহুমুখী কার্যক্রম।
যশোর শহরতলির বিরামপুরে ভৈরব নদ তীরে ১৯৯৪ সালে গড়ে ওঠে শীলা রায় চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বোর্ড পরীক্ষায় কখনোই উল্লেখ করার মতো কৃতিত্বের ছাপ রাখতে পারেনি এখানকার শিক্ষার্থীরা। তবে, মলিন সেই অতীত ভুলে উজ্জ্বল এক আগামীর ভবিষ্যৎ বির্নিমানের লক্ষ্যে ‘মিশন এ-প্লাস’-২০২৬ প্রকল্প হাতে নিয়েছে স্কুলটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। প্রকল্পের উদ্দেশ্য পরীক্ষার্থীদের শতভাগ যেন এ-প্লাস পায়।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করানো হচ্ছে। প্রত্যেকটি বিষয়ের বিভিন্ন অধ্যায়গুলো নিয়মিত অনুশীলন করছে শিক্ষার্থীরা। শ্রেণিকক্ষে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ও মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের শেখাকে আরও কার্যকর তোলা হচ্ছে।
জানা গেছে, স্কুলের নিয়মিত শিক্ষক ছাড়াও বাইরে থেকে অভিজ্ঞ শিক্ষক এনে মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যাতে জটিল ও কঠিন বিষয়গুলো শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে বুঝে নিতে পারে। সেই সঙ্গে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। এই প্রকল্প তাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে নতুন এক উদ্দীপনা। ফলে তারা এখন এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী।
স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগে খুশি সব শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরাও। শিক্ষার্থীরাও বলছে, এই প্রকল্পের ফলে তারা পড়াশোনায় নতুন উদ্দীপনা পাচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মন্দিরা দেবনাথ বলেন, ‘মিশন এ-প্লাস’ চালু হওয়ার পর থেকে ক্লাসে আরও নিয়মিত হয়েছে সবাই। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারছি। আমরা সবাই ভালো ফলাফলের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
আরেক শিক্ষার্থী অরুপ সরকার বলেন, আমাদের শিক্ষক ও অভিভাবকরা আমাদের ভালো ফলাফলের জন্য সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরাও মনোযোগ দিয়ে পড়ছি, যেন সবার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি। বিদ্যালয়টির শ্রেণি শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মিশন এ প্লাস’ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে, নিয়মিত ক্লাস করছে এবং উৎসাহের সাথে লেখাপড়া করছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা দায়িত্ববান ও লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হবে। সেইসাথে তারা সামাজিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
প্রধান শিক্ষক বলেন অসীম দাস বলেন, প্রতিদিনই আমরা ক্লাসের পড়া ক্লাসে তৈরি করে দিচ্ছি। যারা ক্লাসে শেষ করতে পারছে না; তাদের স্পেশাল কেয়ারের মাধ্যমে আবারও ক্লাস নিয়ে তারপর ছুটি দিচ্ছি। এ ছাড়াও বাইরে থেকেও অভিজ্ঞ শিক্ষক এনে তাদের স্পেশাল ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে তারা আগামী এসএসসি পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারে।
বিদ্যালয়টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুক্তাদিরুল হক বলেন, আগামী ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ এ-প্লাস পেতে এই মিশন চলছে। বিদ্যালয়টি যাতে একটি মডেল হয়ে ওঠে সেই চেষ্টা করছি।


























