
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করায় বন উজাড়ের পাশাপাশি ধোঁয়ায় মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ছড়াচ্ছে। উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের আমতলা ও সোনাতলা গ্রামে দেড় শতাধিক কয়লা চুল্লিতে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ কাঠ পুড়িয়ে কয়লা উৎপাদন হচ্ছে। আর এতে স্থানীয় বাসিন্দারা- বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে ১১৩টি অবৈধ চুল্লি ধ্বংস করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযান শেষে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আবারও একই স্থানে নতুন চুল্লি গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে ওই এলাকায় দেড়শ’ এর বেশি চুল্লি চালু রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়, কিছু অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তার মদদে এই অবৈধ ব্যবসায় চলছে। স্থানীয় কয়েকজন চুল্লি মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিয়মিত ঘুষ দিয়ে তারা ব্যবসা চালাচ্ছেন। এমনকি বিভিন্ন মহলকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয় যাতে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ না খোলে। তাছাড়া চুল্লির অধিকাংশ মালিক এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত। তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সিদ্দিপাশায় নতুন করে গড়ে উঠেছে আরো ৫০টির অধিক চুল্লি। নাউলির ওয়াবদা থেকে মজুদখালী ত্রি-মোহনা পযর্ন্ত অধিকাংশ চুল্লি গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া নতুন হাট, কাজীপাড়ায় রয়েছে চুল্লি। নদী পথে গেলে দেখা যায় চুল্লির আগুন ও ধোয়া এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী চুল্লি বন্ধের জন্য প্রশাসের কাছে অভিযোগ ও স্মারকলিপি দেওয়াসহ মানববন্ধন করলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা হতাশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন নীরব থাকায় চুল্লি মালিকেরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম শীল জানান, চুল্লি ভেঙে দিয়ে মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এমদাদুল হক বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।