
বর্ষাকালে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার কৃষকেরা। মাচা ব্যবহারের ফলে সবজির লতা ও ফল মাটি স্পর্ষ করে না। যার কারণে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় কম। এই পদ্ধতির চাষে ফসল পরিষ্কার থাকে। সহজে সংগ্রহও করা যায়।
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা সবজি আবাদের এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ডুগডুগি ভগিরাতপুর, জয়রামপুর কলাবাড়িয়া ও বেষ্টপুরে মাচায় সবজি চাষ বেশি। এছাড়াও এসব গ্রামের বিভিন্ন মাঠে স্বল্প পরিসরে মাচায় সবজি চাষ হচ্ছে।
ভগিরাতপুর গ্রামের চাষি মোশাররফ হোসেন জানান, মাচায় সবজি চাষ করলে ফসলের রোগবালাই কম হয়। বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়। কলাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শাহাজান জানান, ২৫ শতক জমিতে মাচার ওপর পায়েল জাতের করলার আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে করলা বিক্রি করে বাড়তি অর্থ উপার্জন হয়েছে। সদর উপজেলার আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক ইমরান হোসেন জানান, মাচায় সবজি চাষ করে তিনিও লাভবান হয়েছেন।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই পদ্ধতিতে সবজি চাষে ব্যাপক লাভবান হওয়া যায়। স্বাভাবিক পদ্ধতির থেকে দ্বিগুণ সবজি উৎপাদন হয় মাচা পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে সবজি নষ্ট হয় কম। তুলনামূলক ভাবে কীটনাশকও কম ব্যবহার করতে হয়। এই পদ্ধতিতে প্রারম্ভিক খরচটা একটু বেশি। তবে একবার মাচা তৈরি করলে ওই একই মাচা প্রায় ৫ থেকে ৭ বছর কাজে লাগানো যায়। প্রতি বছর শুধু একটু মেরামত করতে হয়।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৬০০ হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্যেই অর্জিত হয়েছে ২৫৫০ হেক্টর । বর্ষাকালীন মাচায় আবাদ হয়েছে ধুন্দুল, কাকরোল, ঝিঙ্গা ও সিম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, পানির মধ্যে মাচায় সবজি চাষ পদ্ধতি একটি উদ্ভাবনী ও টেকসই কৃষি পদ্ধতি। মাচায় বিশেষ পদ্ধতিতে আবাদে সবজির লতানো ও ঊর্ধ্বমুখী বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে মাচা তৈরি করে সবজি চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাধারণত লাউ, কুমড়া, পটল, শসা, সিম, বরবটি, ঝিঙা ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়। এটি একটি লাভজনক পদ্ধতি।