শুক্রবার ১৭ অক্টোবর ২০২৫

৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোরে চূড়ায় উঠছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ, একদিনে শনাক্ত ২৩ রোগী

এম এ সাগর

প্রকাশিত: ১৯:০৯, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৯:১৩, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

যশোরে চূড়ায় উঠছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ, একদিনে শনাক্ত ২৩ রোগী

দীর্ঘদিন নিধন কার্যক্রম না থাকায় যশোর শহরে এখন দিনে-রাতে সমানে চলছে মশার রাজত্ব। আর ক্ষুদ্র এই পতঙ্গটির উৎপাতের মধ্যেই গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ২৩ জনের ডেঙ্গু সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ফলে সংক্রমণের এমন ঊর্ধ্বমুখী তথ্য-পরিসংখ্যান থেকে ধারনা করা যাচ্ছে যে- যশোরে ডেঙ্গুর প্রকোপ হয়তো চূড়ায় চড়ছে। অথচ এই রোগের বাহক এডিস মশা নিধনে চোখে পড়ার মতো কোনো তৎপরতা নেই। তবে পৌর-কর্তৃপক্ষের দাবি, মশা নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এদিকে, নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে পৌরসভা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন প্রায় প্রতিদিনই হয়। তবে সেটি ডিসি ও এসপির বাংলোসহ প্রশাসনের কয়েকটি দপ্তরে। অন্য কোথাও এমন কার্যক্রম চলমান নেই। শহরের নাগরিকরাও বলছেন, মশক নিধনের কোনো দৃশ্য সম্প্রতি চোখে পড়েনি তাদের।

শহরে মশার উপদ্রব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের যশোর জেলা কমিটির সম্পাদক তসলিম উর রহমান বলেন, মশা নিধনে পৌরসভার কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। এর মধ্যে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করতে পারে।

সুরধুনী সংগীত নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহামুদ হাসান বুলু জানান, পৌরসভা মশক নিধনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ আরো বাড়বে।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৩ জনের মধ্যে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে ২৪ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ সময়ে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। সূত্রমতে, বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৪৭ রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ১১, অভয়নগরে ২৬, চৌগাছায় ২, ঝিকরগাছা, কেশবপুর ও মণিরামপুরে ১ জন করে এবং শার্শায় ৫ রোগী চিকিৎসাধীন। বাঘারপাড়ায় কোনো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি নেই। 

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় মোট ৭৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৭২৪ জন সুস্থ হয়েছেন, ৫ জনকে অন্যত্র রেফার করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

যশোরের সিভিল সার্জন মাসুদ রানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ২৩ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত  হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এডিস মশার প্রজনন বেড়ে যায়। প্রতিবছর এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পায়।  তিনি জানান, বন-জঙ্গল ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশও মশা বৃদ্ধির কারণ। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মশা নিধন অভিযান নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তা আরও জোরদারের ব্যাপারে আহ্বান জানানো হয়েছে। 

মশার উপদ্রব নিয়ে যশোর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জায়েদ হোসেন বলেন, গত ১৫ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মশক নিধনের ‘ক্রাস প্রোগ্রাম’ পরিচালনা করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ডভাবে প্রতিদিনই মশা নিধন কার্যক্রম চলছে। শহরের ড্রেনগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশ পরিষ্কার করা হয়েছে। মশক নিধনে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: