রোববার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নড়াইলে বন্ধ ৬ সিনেমা হলের জায়গায় মার্কেট-মাদ্রাসা 

রানার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:১০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৪:১০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নড়াইলে বন্ধ ৬ সিনেমা হলের জায়গায় মার্কেট-মাদ্রাসা 

নড়াইলের ছয়টি সিনেমা হলই বন্ধ হয়ে গেছে। হল ভবনের মধ্যে দুটি এখন পরিত্যক্ত। ব্যক্তি উদ্যোগে দুটিতে বিপণিবিতান হয়েছে। একটিতে চলছে মাদ্রাসার কার্যক্রম। আর ২০ বছর পরিত্যক্ত থাকা একটি সম্প্রতি ইজারা নিয়ে মার্কাজ মসজিদ করার উদ্যোগ নিয়েছে তাবলিগ জামাত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একসময় জেলার ছয়টি সিনেমা হল দর্শকে ঠাসা থাকত। দিনে চারটি করে শো চালাতে হতো। ঈদ ও পূজার মতো উৎসবে মালিকরা দর্শক সামলাতে হিমশিম খেতেন। কোনো কোনো সিনেমা মাসজুড়ে চললেও দর্শকের কমতি হয়নি। অথচ দর্শক খরায় কুলিয়ে উঠতে না পেরে হলগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা। ভেঙে ফেলা হয়েছে হলগুলোর অবকাঠামোও।

১৯৭০ সালে নড়াইল শহরে ‘চিত্রাবাণী’, ১৯৮২ সালে লোহাগড়া শহরে ‘সেভেন স্টার’ ও ‘সন্ধ্যা’, ১৯৮৪ সালে কালিয়ায় ‘টাউন হল’ পরে ‘আল্পনা’, ২০০১ সালে ফেরিঘাটের ওপারে সীমাখালীতে ‘গোলক’ ও সদরের গোবরা বাজারে ‘আশা’ সিনেমা হল গড়ে ওঠে। দর্শক-খরার কারণ দেখিয়ে ২০০০ সালে প্রথম বন্ধ ঘোষণা করা হয় আল্পনা সিনেমা হল। এর পর থেকে হল ভবনটি পরিত্যক্ত। তবে গত বুধবার ভবনের সামনে ‘কালিয়া উপজেলা তাবলীগি মার্কাজ মসজিদ’ নামে ব্যানার টানানো নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

সিপিবির জেলা সভাপতি জি এম বরকত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, কাছাকাছি দূরত্বে সরকার আধুনিক মডেল মসজিদ করেছে। সিনেমা হলের জায়গার পরিবর্তে অন্যত্র মসজিদ হলে সমালোচনা হতো না। কর্তৃপক্ষের উচিত জায়গাটি সংরক্ষণ করা।

জানা যায়, ব্যানারটি টানিয়েছে ‘আলমী শুরায়ী নেজাম’ নামের সংগঠন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষে সেখানে মসজিদের কার্যক্রম চলবে। 

এ বিষয়ে আলমী শুরায়ী নেজামের সাথি ও কালিয়া উপজেলা ওলামা-ইমাম পরিষদের সভাপতি হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে বার্ষিক চার হাজার টাকায় আমরা ভবনটি ইজারা নিয়েছি। সংস্কারের মাধ্যমে যতটুকু ব্যবহারযোগ্য করা সম্ভব, সেখানে তাবলীগি মার্কাজ মসজিদ করব। দেশ-বিদেশ থেকে কালিয়ায় জামাত প্রথমে এখানে উঠবে। স্থানীয় সাথিদের সঙ্গে পরামর্শ করে তারা বিভিন্ন মসজিদে দাওয়াতি কাজে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি অর্পিত সম্পত্তি। একসময় সিনেমা হলের জন্য ইজারা নিয়েছিল। সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার পর গত ২০ বছর ইজারা বন্ধ। পরিত্যক্ত ভবন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি দখলে রাখা ও রাজস্ব আদায়ের জন্য সম্প্রতি ইজারা দেওয়া হয়েছে।’ অন্যদিকে, ২০২১ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় চিত্রাবাণী সিনেমা হল। হল ভবনের অবকাঠামো ধ্বংসের পর টাউন ক্লাবের জায়গাটি এখন পরিত্যক্ত। একই দশা সেভেন স্টার সিনেমা হল ভবনের। গোলক সিনেমা হলের স্থাপনা দীর্ঘদিন পড়ে ছিল। ২০০৬ সালে এক ব্যক্তি জায়গাটি কিনে ওমর ইবনে খাত্তাব (র.) সীমাখালী মাদ্রাসা দিয়েছেন। ২০২১ সালে বন্ধের পর ভেঙে ফেলা হয় সন্ধ্যা সিনেমা হল ভবন। আড়াই বছর আগে সেখানে ব্যক্তি উদ্যোগে বিপণিবিতান করা হয়েছে।

২০১৫ সালে বন্ধের পর ভেঙে ফেলা হয় আশা সিনেমা হল ভবন। এর কিছু জায়গা নড়াইল-খুলনা ফুলতলা সড়কের জন্য অধিগ্রহণ হয়েছে। বাকি অংশে চলছে বিপণিবিতান।
 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: