অলনাইনে আবেদনের পর প্রিন্ট কপি জমা না দেওয়া সত্ত্বেও যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ জন্মসদন ইস্যু করায় বিপাকে পড়েছেন এক অভিভাবক। উচ্চপর্যায় থেকে বেঁধে দেওয়া টার্গেট পূরণ করতে এমনটি করায় ওই অভিভাবকের সন্তানের জন্মনিবন্ধন পৌরসভার বদলে ইউনিয়নে সম্পন্ন হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, অনলাইন আবেদনটির কোনো প্রকার যাচাইবাছাই ও প্রিন্ট কপি জমা না নিয়েই তড়িঘড়ি করে সনদ ইস্যু করায় এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিকার চেয়ে যশোরের ডেপুটি কমিশনারের (ডিসি) কাছে করা এক অভিযোগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
যশোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেহেদী হাসান সুমন নামে ওই অভিভাবকের অভিযোগ, অনলাইন আবেদনের ‘ডকুমেন্ট’ জমা না দেওয়া সত্ত্বেও জন্মসনদ ইস্যুর ব্যাপারে আপত্তি জানালে ইউনিয়নটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কমপিউটার অপারেটর বিষয়টির সমাধানের আশ্বাস দেন। চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের বদলে যশোর পৌরসভায় জন্মনিবন্ধন করে দেওয়ার দায়িত্ব নেন তারা। এরপর তারা অনলাইনে আবেদনের কাগজপত্র জমা নিয়ে পৌরসভায় জন্মনিবন্ধনের জন্য ফের আবেদন করেন। কিন্তু সেই আবেদনে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের কমপিউটার অপারেটর ভুল করায় তার ছেলের নামের বিকৃতি ঘটেছে। নতুন আবেদনে তার ছেলের নাম আব্দুল্লাহ আল মাজিদের বদলে ‘আসাদুল আল মাজিক’ লেখা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে দ্বিতীয় পুত্র সন্তানের বাবা হন মেহেদী হাসান সুমন। এরপর সন্তানের জন্মনিবন্ধনের জন্য যশোর শহরের দড়াটানায় ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে জামালনেট কমপিউটার সার্ভিসে যান। প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার অপারেটর রাসেল হোসনের কাছে অনলাইনে জন্মনিবন্ধনের আবেদনের জন্য যশোর পৌরসভার প্রয়োজনীয় সব ওকুমেন্টস দেন। কিন্তু তিনি ভুলবশত যশোর পৌরসভার পরিবর্তে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেন। প্রিন্ট কপি হাতে পাওয়ার পর ভুলটি নজরে আসে। এরপর বিষয়টি কমপিউটার অপারেটরকে জানালে তিনি বলেন, ভাই এতে কোনো সমস্যা নেই। আমি আবার পৌরসভায় আবেদন করে দিচ্ছি। কিন্তু পরবর্তীতে পৌরসভায় গেলে জাাননো হয় যে, তার সন্তানের জন্মনিবন্ধন ইতোমধ্যে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সম্পন্ন হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে- এরপর পৌরসভায় গেলে সেখানকার কমপিউটার অপারেটর মেহেদী হাসান সুমনকে জানান যে, আবেদনের প্রিন্ট পেপার জমা না দিলে জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যুর নিয়ম নেই। এক্ষেত্রে চাঁচড়া ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করেছে। একবার কোথাও নিবন্ধন ইস্যু হলে দি¦তীয়বার অন্য কোথাও করার সুযোগ নেই। এরপর চাঁচাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কমপিউটার অপারেটরের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে উলটো তাকে ঢাকায় যেতে বলেন তারা। ঢাকায় গিয়ে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে যে জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে সেটি ‘ডিলিট’ করে আসার পরামর্শ দেন। এ নিয়ে আপত্তি তুললে ওই কর্মকর্তা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক জন্মনিবন্ধন সম্পন্নের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ টার্গেট বেঁধে দেয়। এ ছাড়া ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে কোনো ফিস লাগে না। যার কারণে বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করতে নিয়মানুযায়ী যাচাইবাছাই ও অলানইন আবেদনের ডকুমেন্ট জমা ছাড়াই সনদ ইস্যু করেছেন।
মেহেদী হাসান সুমন অভিযোগ করেছেন, আশ্বাস অনুযায়ী চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ পৌরসভায় জন্মনিবন্ধন করে দিতে পারেননি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছে যে, স্থানীয় সরকারের একটি অফিসে জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন হলে অন্য আরেকটি অন্য অফিসে নিবন্ধনের সুযোগে নেই। সার্ভার সেটি গ্রহণ করে না।
এরপর তিনি অনলাইনে বিষয়টি যাচাই করে দেখেন- আগের করা সেই নিবন্ধনটিই বহাল রয়েছে। উলটো সেখানে ছেলের নামের বিকৃতি ঘটেছে।


























