রোববার ০৩ আগস্ট ২০২৫

১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় গত ১ বছরে বিবাহ বিচ্ছেদ ৫৫২১টি

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ৩১ জুলাই ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় গত ১ বছরে বিবাহ বিচ্ছেদ ৫৫২১টি

চুয়াডাঙ্গায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের হার। জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জেলা ৫ হাজার ৫২১টি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। ওই বছর বিয়ের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ১০৬টি। জানা গেছে, পারিবারিক অস্থিরতা, স্বার্থপরতা, পরকীয়া, বাল্যবিবাহ, বনিবনা না হওয়া ও মতবিরোধসহ নানা কারণে ভেঙে পড়ছে দাম্পত্য সম্পর্ক।

জেলার চারটি উপজেলার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় বিয়ে হয়েছে ২ হাজার ২২৬টি। বিচ্ছেদ ২ হাজার ১৭৭টি। আলমডাঙ্গায় বিয়ে হয়েছে ২ হাজার ৪৩১টি। বিচ্ছেদ ১ হাজার ২৩৭টি। দামুড়হুদায় বিয়ে হয়েছে ১ হাজার ৮২৮টি, বিচ্ছেদ ৯২১টি। জীবননগরে বিয়ে ১ হাজার ৬২১টি, বিচ্ছেদ ১ হাজার ৯৬টি। সব মিলিয়ে গত বছর জেলার চার উপজেলায় মোট বিয়ে হয়েছে ৮ হাজার ১০৬টি। আর তালাকের ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৫২১টি। যা মোট বিয়ের প্রায় ৬৮ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার কাজী সামসুল হক জানান, বিবাহবিচ্ছেদের পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে পরকীয়া। এছাড়া সংসারে বনিবনা না হওয়া, স্বামীর প্রবাসজীবন, পারস্পরিক অবিশ্বাসসহ নানা কারণ রয়েছে।

জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, বেশিরভাগ তালাকের উদ্যোগ নারীদের দিক থেকেই আসছে। বিশেষ করে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে তালাকের হার বেশি। জীবননগরের কেডিকে ইউনিয়নের দেহাটি গ্রামের এক নারী জানান, স্বামী মাদকাসক্ত। রোজগার করতেন না। আর কথায় কথায় মারধর করতেন। বাধ্য হয়ে তালাক দিতে হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদরের শৈলমারী গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, স্ত্রী ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় দিত। একদিন মোবাইল কেড়ে নিলে সে রাগ করে চলে যায়। এক মাস পর ডিভোর্স লেটার পাঠায়।” জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-আমিন বলেন, বাল্যবিবাহ, পরকীয়া, পারিবারিক অজ্ঞতা, হিংসা ও অশিক্ষার কারণে এসব সমস্যা বাড়ছে। কাজী, ইমাম, ঘটকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা-সেমিনার করছি। শিগগিরই উপজেলায় তালাকের কারণ চিহ্নিত করতে পদক্ষেপ নেব।

গবেষক  অধ্যক্ষ সাজেদা পারভীন বলেন, সরকার নারীর উন্নয়নে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি তালাকের হারও কমে আসবে। উপজেলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক বলেন, ইসলামি বিধিনিষেধ না মানা, ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব এবং পরকীয়াই বিবাহবিচ্ছেদের প্রধান কারণ। এটা এখন মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে।
 

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: