
নড়াইল সদর উপজেলার চরশালিখা গ্রামে ছিয়ারন নেসা (৮৫) নামে এক বৃদ্ধার জমি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন-প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গ্রামবাসীর আয়োজনে শনিবার দুপুরে চরশালিখা ত্রিমাথায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন-প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, নাতনি কমলা বেগম চরশালিখা গ্রামে প্রায় ৪২ শতক বসতভিটার জমি লিখে নিয়ে নানী ছিয়ারন নেসাকে বাড়ি থেকে প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন ছিয়ারন নেসার একমাত্র ছেলে বাবু মোল্যাসহ গ্রামবাসী।
প্রতিবেশীরা জানান, আড়াই মাসের সন্তান কমলাকে রেখে তার মা আনজিরা বেগম মারা যান। এরপর নানী ছিয়ারন নাতনি কমলাকে নিজের বুকের দুধ খাইয়ে বড় করেন। আদরের নাতনি কমলাকে নিজ গ্রাম চরশালিখায় বিয়ে দেন। এরপর নাতজামাইকে প্রায় সাত শতক জমি বিক্রি করে আট বছর আগে বিদেশ পাঠান। নাতনি কমলা বেগমের আবদারে বসতভিটার পাঁচ শতক জমি লিখে দিতে রাজি হন নানী ছিয়ারন। কিন্তু কমলা বেগম কৌশলে নানীর কাছ থেকে ৪২ শতক জমি লিখে নেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে বৃদ্ধা ছিয়ারন বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে উল্টো নানিসহ প্রতিবেশীদের নামে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ও থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কমলা বেগম।
এদিকে, কমলার দাবি, তিনি নানীর কাছ থেকে ফাঁকি দিয়ে জমি লিখে নেননি। তবে গ্রামবাসীরা বলেন, ছিয়ারন নেসার অনেক জমি থাকতেও আদরের নাতিকে সব জমি লিখে দিয়ে আজ পথে পথে ঘুরছেন। বাড়িতে উঠতে পারছেন না। নিজের ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে গ্রামে এ-বাড়ি, ও-বাড়ি খেতে হচ্ছে ছিয়ারন নেসাকে। অনেক কষ্টে বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হচ্ছে। ছিয়ারন নেসা ছেলে বাবুকেও মাথা গোঁজার মতো একটু জমি দিতে পারেননি। সব জমি তার নাতনি লিখে নিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ছিয়ারন নেসার ছেলে বাবুর সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। ঘটনাটি নড়াইল সদর থানা পুলিশ তদন্ত করছে। বৃদ্ধা ছিয়ারন নেসা যেন ন্যায়বিচার পান এই প্রত্যাশা করছেন গ্রামবাসী।
সদর থানার এসআই সুকান্ত ও এএসআই জাবেদ বলেন, শুক্রবার বিকেলে আমরা সরেজমিন তদন্ত করেছি। ভুক্তভোগীসহ গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন-বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাখা কাজী, ভুক্তভোগী ছিয়ারন নেসা ও তার ছেলে বাবু মোল্যা, মশিয়ার রহমান, নবীর হোসেন, লিটন শেখ, আব্দুর রহমান, মুরাদ হোসেনসহ অনেকে।