
ডি আর কঙ্গোতে এ সপ্তায় পৃথক দুই নৌকা দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছে বহু মানুষ।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে ইনডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একুয়েতার প্রদেশে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। দুই দুর্ঘটনাস্থলের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। ডি আর কঙ্গোর মানবিক সহায়তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রদেশের লুকোলেলা এলাকায় প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা আগুন ধরে উল্টে যায়।
মালাঞ্জে গ্রামের কাছে কঙ্গো নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই হোয়েলবোট থেকে ২০৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। এর একদিন আগে প্রদেশের বাসাঙ্কাসু এলাকায় একটি মোটরচালিত নৌকা উল্টে কমপক্ষে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলেছে, নিহতদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী ছিলেন। এখনও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন, যদিও সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের যাত্রায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করার কারণে বুধবারের দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে উভয় দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান এবং উদ্ধার তৎপরতা চলছে কি না তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয় এক নাগরিক সংগঠন দুর্ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং দাবি করেছে যে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি।
ছবিতে দেখা গেছে, গ্রামবাসী দুর্ঘটনাস্থলে মৃতদেহ ঘিরে মাতম করছে। মধ্য আফ্রিকার এ দেশে নৌকাডুবির ঘটনা বাড়ছে, কারণ সড়ক যোগাযোগের সুবিধা সীমিত হওয়ায় মানুষ তুলনামূলক সস্তায় নদীপথে কাঠের নৌকায় যাতায়াত করছে। আর অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহনের কারণে সেগুলো দুর্ঘটনায় পড়ছে।
এসব নৌযানে সাধারণত জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট পাওয়া যায় না, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বেশিরভাগ নৌযান চলে রাতের বেলা। ইনডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, রাতের বেলা দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার অভিযান জটিল হয়ে পড়ে এবং অনেক মৃতদেহের খোঁজ পাওয়া যায় না।
গত বছর অতিরিক্ত যাত্রী বহনের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা। বলেছিলেন, যারা নৌপরিবহনের নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করবে, তাদের শাস্তি পেতে হবে। জুন মাসে কিনশাসা শহরের কাছে একটি নদীতে ২৭০ যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ৮০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। তখন ওই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল।
তবে তা উপেক্ষা করে এখনও নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই চলছে, কারণ সড়ক পথে দূরের যাত্রার খরচ পোষানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না।