বুধবার ১৫ অক্টোবর ২০২৫

২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে আউশের ফলন ও বাজার দর  মন্দা, লোকশানের শঙ্কায় চাষিরা

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা 

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৬:৩৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জীবননগরে আউশের ফলন ও বাজার দর  মন্দা, লোকশানের শঙ্কায় চাষিরা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ফসলের মাঠে চলছে আউশ ধান কাটার মহোৎসব। ধান ঘরে তুলতে নবান্ন উৎসবে মেতেছে কৃষাণ-কৃষাণীরা তবে এবার আউশের ফলনে সন্তুষ্টি না চাষিরা। এ ছাড়াও ধানের বাজার মূল্যও অনেকটাই কম এবার।

চাষিরা জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে ধানক্ষেতে দীর্ঘসময় পানি আটকে থাকায় ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়নি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে অনেক ধান চিটা হয়ে গেছে। এতে ফলন কম হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৮-২০ মন ধান হওয়ার কথা থাকলেও ধান পাওয়া যাচ্ছে ১৫-১৬ মণ। নীচু এলাকায় ধানের ফলন আরও কম হয়েছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় পানির নীচ থেকে কৃষকেরা ধান ঘরে তুলতে পারেননি এখনো। এ ছাড়া বর্তমানে  ধানের বাজারমূল্য তুলনামূলক কম। এই দামে ধান বিক্রি করলে উৎপাদন খরচ উঠবে না। 

জানা গেছে, আউশ ধান ১১৫০ টাকা থেকে ১১৮০ টাকা দরে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে। পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া ধানের দাম আরও কম দিচ্ছে আড়তদাররা।  জীবননগর উপজেলার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, আউশ ধান মাড়াইয়ে মেতেছেন চাষিরা। উঁচু জমিতে কম্বাইন্ড হারভেস্টারের সাহায্যে ধান কাটা হচ্ছে। নীচু জমিতে ও হেলে পড়া ধান শ্রমিকেরা কাটছেন।

জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের ধান চাষি হাসান আহম্মেদ বলেন, এক বিঘা জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছিলাম। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের ফলন তেমন ভালো হয়নি। কম্বাইন্ড হারভেস্টারের সাহায্যে ধান মাড়ায় করলে খরচ কিছুটা সাশ্রয় হতো। ধান ক্ষেতে পানি বেশি ও কিছু ধান গাছ হেলে পড়ার কারণে কম্বাইন্ড হারভেস্টারের সাহায্যে ধান কাটা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের দিয়ে ধান কাটছি।  কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটতে না পারায় দ্বিগুণ খরচ বেশি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ধান চাষে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঝাড়াই-মাড়াইয়ের ১০/১২ মণ ধান হতে পারে। এখন বাজারে ধান বিক্রি করলে ৫ হাজার টাকা লোকসান হবে।

আরেক চাষি সাজিমদ্দী জানিয়েছেন, এবছরে সবারই আউশ ধানের ফলন কম হয়েছে। ধানের বিচালি করতে পারলে খরচ কিছুটা পুষিয়ে যেত। কিন্তু পানির জন্য সেটাও সম্ভব হয়নি। ধান চাষ করে বিঘাপ্রতি ৫-৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে। 

জীবননগর কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, জীবননগর উপজেলার এবার মোট ৬ হাজার ৫ শ’ ১২ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৯০ শতাংশ জমিতে ধান কাটা হয়ে গেছে। এবছর অতি বৃষ্টিতে ধান গাছের ক্ষতি হয়েছে। যার কারণে ফলন বিঘাপ্রতি ২ মন করে কম হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ধানের বাজার মূল্য ঠিক আছে।
 

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ: