
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় পোল্ডার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে বসানো অবৈধ ‘নাইন্টি পাইপ’ উচ্ছেদে অভিযান শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার পাউবো ও প্রশাসন এ অভিযান শুরু করেছে। চিংড়ি ঘের মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে এ পাইপ ব্যবহার করে বাঁধের ভেতর থেকে পানি সেচ করছিলেন। যা স্থানীয়দের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনছিল।
এদিন সকাল থেকে শ্যামনগরের ৫ নম্বর পোল্ডারের অন্তর্গত আটুলিয়া ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের এসব অবৈধ পাইপ অপসারণের কাজ শুরু করা হয়। শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে এ উদ্যোগ নেয়।
উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলামসহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঘের মালিক সরকারি বিধি অমান্য করে বেড়িবাঁধে ‘নাইন্টি পাইপ’ লাগিয়ে পানি উত্তোলন করতেন। এর ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে, নদীর জোয়ারের পানি অনায়াসে গ্রামে প্রবেশ করছে। এতে চাষাবাদ ও বসতভিটা হুমকির মুখে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে প্রশাসনের সহযোগিতায় এই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব পাইপ উচ্ছেদ করা হবে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বেড়িবাঁধের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। সেখানে এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্যোগের কারণ হতে পারে। তাই ‘নাইন্টি পাইপ’ অপসারণ সময়োচিত ও জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুন বলেন, পাউবো’র বেড়িবাঁধে অবৈধভাবে কোনো পাইপ বসানোর সুযোগ নেই। যেসব পাইপে বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে, সেগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করা হচ্ছে। পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং উপকূল রক্ষায় এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পাউবো সূত্র জানায়, বেড়িবাঁধ থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি ঘের করার নিয়ম নেই। কিন্তু অনেক ঘের মালিক এ নিয়ম ভেঙে বাঁধ ঘেঁষে চিংড়ি চাষ করছেন এবং নাইন্টি পাইপ বসিয়ে বেড়িবাঁধকে ঝুঁকির মুখে ফেলছেন।
উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ বেড়িবাঁধে এ ধরনের অবৈধ স্থাপন করতে না পারে।